আমার আকাশ – My Sky

<<GO BACK              NEXT>>

Bengali feature film

আমার আকাশ (My Sky)

An unconditional love. A romantic love story.

Created by Sanjib Nath

Story & Direction by Bidyut Kanti Majumdar

 

SCREENPLAY

1) INT. VERANDA - AFTERNOON

টালি বা চালা ঘর | উঠানের পাশেই খোলামেলা রান্নাঘর | খানিকটা উঁচুমাটির বারান্দাতে বসে রফিক মোল্লা। দপুুরের খাবার খাওয়ার জন্য আসন পেতে বসে | পাশেই একটা জলের গ্লাস রাখা | পরনে লুঙ্গি ও সাদা গেঞ্জি |
আজাদের(15) হাত দুটি বাঁধা বারান্দার খুটির সাথে | মলিন মুখে দাঁড়িয়ে |
ফাতেমা রান্নাঘরে রেগে রেগে রান্না করছে । আর ঝগড়ার মতো উচ্চস্বরে কথা বলে যাচ্ছে একা একা ….

ফাতেমা
আর পারি না—
কত কতবার আমি এইভাবে আইটকে রাখবো বইলতে পারো ?
এত চাপ আর সহ্য হয় না |
যে ভাবে নিজের জায়গা ছেইড়ে চলে এইছি
কি হইল —এখি নে ও কি শান্তি আছে আমার ?

কড়াইতে খুন্তি নাড়ি য়ে কথাগুলি বলে চলে ছে | মাঝে মাঝে আজাদে র বাবা রফিক মোল্লার দিকে তাকায় রাগান্বিত চেহারায়

তুমি কি ছুই বইলতে পারো না
বোঝোনা কিছুই ….!
ছেলে মেয়ে নিয়ে শূন্য হাতে চলে এইছি
নিশ্চিন্তে থাইকবো বলে |
কি সুখে আছি —-!
যেমন বাবা তেমনি তার ছেইলে |
আমার হইছে যত মরণ
মরলে বেইঁচে যেতাম

কথাগুলি বলতে বলতে কান্না শুরু করে | খুন্তি নাড়ার শব্দটাও শব্দটা বাড়তে থাকে |

2) INT. VERANDA - CONTINUE
আজাদের বাবা রফিক ফ্যাল ফ্যাল করে দেখছে সব |
একবার আজাদের দিকে -একবার ফাতে মার দিকে তাকাতে থাকে | কিছু বলতে চেষ্টা করলেও বলতে পারে না | কোমরে লুঙ্গির ভাজে গোঁজা বিড়ির প্যাকেট বের করে একটা বিড়ি ধরায় |
কিছুক্ষণ নীরবে বসে বি ড়ি টানতে থাকে | তারপর বিরক্তির ভঙ্গিতে উঠে চলে যায় |
ঘরের পাশে রাখা একটা কোদাল ঘাড়ে নিয়ে মাঠের দিকে চলে যায় |

3) INT. CONTINUE
ফাতেমা এসব দেখতে পেয়ে কান্না থামায় | কাত হয়ে খোলা দরজার দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে

ফাতেমা
কি হইছে – না খেয়ে চইলে যাচ্ছ যে ..!
কে খাবে এই রান্না ?
তোমরা সবাই মিলে আমারে জ্বালাবা !

রফিক
তুই খা |
আমাদের কথা তোর ভাইবতে হবে না

রফিক যেতে যেতে এই কথাগুলি বলতে থাকে পিছনে না তাকিয়ে |

4) INT. CONTINUE
এসব দেখে আজাদ অপরাধী মতো তাকায় | কাচুমাচুকরে একটুকাঁদতে থাকে | বাধা হাত একটুটানতে থাকে খোলার জন্য |

5) INT. CONTINUE
আজাদের বোন ঘরের কোনে এক পাশে চুপচাপ ভয়ে দাঁড়িয়ে আছে |
তার চোখে মুখেও হতাশা ধরা পড়ে |

6) INT. CONTINUE
ফাতেমা রান্নাঘর থেকে খুন্তি হাতে বেরিয়ে আজাদের কাছে এসে বলতে থাকে ….

ফাতেমা
তুই কি চাইছিস বলতো
সবাইকে মারবি ?
তোকে আর সারাদিন না খাইয়ে রাখবো
এখানে এসেও কোনো শান্তি নাই আমার !
আমি মরি – তারপর যা খুশি তুই কর |
কথা গুলি বলতে বলতে আবার রান্নাঘরে চলে যায় |
এবার সুর করে কান্না শুরু করে | রান্নাঘর থেকে খুন্তির আঘাতের শব্দ শোনা যায় দ-ুতিন বার .
[ করাইতে খুন্তির আঘাত করলে যেমন শব্দ হয় ]
[ ফাতেমার কান্নার সুরের সাথে অসহায় আজাদ কে দেখানো হবে ]

7) EXT. NEAR RIVER - AFTERNOON
আজাদে র (15) পরনে ফুল প্যান্ট, গায়ে জামা |
দহুাতে বাজারের ব্যাগ – সব্জি ভরা |
হাসতে হাসতে আজাদ দৌড়ে আসছে নৌকার ঘাটের দিকে | ঘাটের কাছে আসার পর আজাদ ব্যাগ থেকে সবজি ঢেলে ফেলে |
ব্যাগের ভিতর থেকে একটা জামা ও প্যান্ট বের করে কাঁধের উপর রাখে |
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে একটু হাঁপিয়ে নেয় |
নিচু হয়ে হাত দটিু হাটুর উপর ভর করে | হাসি ও হাপ দটুটোই একসাথে চলতে থাকে |
এক মুক্তির উল্লাস যেন তার হাসিতে ধরা পড়ে |
[নদীর ঘাটে নৌকা বাধা থাকবে । আজাদ নৌকার দড়ি খুলছে দেখানো যেতে পারে ]

8) INT.: OLD HOUSE (HUT) - NOON
ছোট্ট কুঁড়ে ঘর | ছোট্ট উঠান | উঠান বা বারান্দার এক কোনে রান্না করছে বছর 60 -এর আজাদ |
মুখে মৌলভী দাড়ি | মাথায় টুপি |
পালিয়ে আসার স্মৃতিটা মনে করতে করতে সমানে হেসে চলেছে | হাসিটা এমন যে স্মৃতিটা বেশিদিনের নয় | এখনো সেই ছোট্ট আজাদ মা-বাবাকে ফাঁকি দিয়ে সে জিতে গেছে |
রান্নার আগুন কখন নিভে গেছে তার লক্ষ্যই নেই | কিছুক্ষণ পর সে যখন বাস্তবে ফিরে আসে – হাসি থামিয়ে আবার আগুন জ্বালাতে চেষ্টা করে |

9) INT. OLD HOUSE - EVENING
আজাদ (15) বারান্দাতে নামাজ পড়ছে | নামাজের শেষে মাদরু গুটিয়ে রাখে |
বারান্দাতে একটা হারিকেন জ্বালিয়ে ঘর থেকে বের হয় |

10) INT. BASUDEB’S HOUSE - EVENING
ছোট্ট মাটির ঘর | বারান্দাতে বসে বাসুদেব দোতারায় সুর তুলছে |
শ্রোতা সরলা - একটু দূরের দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে আছে |

দোতারায় গানের সুর:
আমি অপার হয়ে বসে আছি …

দোতারা সুরের মধ্যেই আজাদ(15) বাসুদেবের বাড়িতে প্রবেশ করে |
সরলা উঠে এসে আজাদকে একটা আসন পেতে দেয় |
আজাদ এসে হাসি মুখে আসনে বসতে বসতে সরলার সাথে কুশল বিনিময় করে –

আজাদ
ভাবি ….ভালো আছো…না ?

সরলা
হ ভাই …ভালো আছি |
তুমি কেমন আছো ?

আজাদ
ভাবি –আছি ভালো | আপনাদের দোয়া |
বাসুদেব দোতারা বাজানো বন্ধ করে আজাদের সাথে কুশল বিনিময় করে |

বাসুদেব
রফিক ভাই— কেমন আছো ?

আজাদ
এই আল্লাহ তায়ালাই যেমন রাইখে |
ভালো আছি দাদা

বাসুদেব
আজ একটু দেরি কইরা আইছো !
আমি ভাবলাম –তুমি আর আইবা না |

আজাদ
দেরি হইলে ও আসমু |
তোমার গান না শুনলে মনে হয়-- আজ কি
যে ন একটা কাজ বাকি থাইকা গে ল | [ মৃদু হেসে ]

বাসুদেব
[ একটু হাসতে থাকে ]
ভাল শ্রোতা না পাইলে গান কইরা সুখ নাই |
[ হাসতে থাকে ]
তোমার ভাবিরে জোর কইরা আর কত গান শুনাইবো |

সবাই হাসতে থাকে | সরলা একটু দূরে বসে পান সাজায় | সাজিয়ে আজাদকে দেয় |
আজাদ সাদরে নেয় | কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলতে থাকে —

আজাদ
শুধু গানের জন্য তো আসি না – ভাবির হাতে
একটা পানের লোভেও আসি |
সবাই হাসতে থাকে |
পানটা মুখে দিয়ে আজাদ বলতে থাকে —-
এবার একটা গান ধরো বাসুদা—

সরলা দেওয়ালে হেলান দিয়ে আগের জায়গায় বসে | বাসুদব কিছুক্ষণ দোতারাতে সুর তোলার চেষ্টা করে | তারপর গান গাইতে শুরু করে —

গান :
আমি অপার হয়ে বসে আছি

[ সবাই হারিকেনের আলোতে বসে | গানের সময় আলোছায়াতে সবার এক্সপ্রেশন দেখানো হবে | দোতারার বাজনাটাও দেখানো হবে ক্লোজ শটে | এখানে বিভিন্ন রকম শর্ট ও লাইটিং এর ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশটা খুব ড্রামেটিক করতে হবে ]
গানের শেষে সবাই কিছুক্ষণ নীরবতার মধ্যে থাকে |
[গানের আবেশ বোঝাতে ]
গানের শেষে আজাদ একটা বিডির প্যাকেট থেকে বিড়ি বের করে |
বাসুদেবকেও বিড়ির প্যাকেট এগিয়ে দেয় |
দজুনে বিড়ি ধরায় |
দইু একটা টান দিয়ে আজাদ বলতে শুরু করে …..

আজাদ
তোমার গানের মধ্যে একটা মায়া আছে …. দাদা
তোমার গান শোনার পর আর অন্য কিছু ভালো লাগে না …..
অন্য জগতে বিচরণ করি ।
গানের আবেশে রাত কাইটা যায় |
[ কিছুক্ষণ চুপ থাকে সবাই |
আজাদ আরো দইু এক টান দিয়া বলতে থাকে ]
আজ উঠি বাসুদা |
রাইতে রান্না করতে হইবো |
সকালে আবার ফুরানে যাইতে হইবো |
চলি –- ভাবি
আল্লায় তোমাগো ভালো রাখুক |
[ উঠতে উঠতে ]
চলি দাদা | কাল আমুএনে |
[ বিড়ি টানতে টানতে আজাদ বেরিয়ে যেতে থাকে | ]

সরলা
সাবধানে যাইও ভাই

আজাদ
হ ভাবি —যামু
তোমরাও ভালো থাইক |
[ যেতে যেতে ]

11) EXT. BESIDE BIDISHA’S HOUSE - EARLY MORNING
রাস্তার পাশে একটা মধ্যবিত্ত পরিপাটি বাড়ি |
[ যে কোনো বাড়ি কাঁচা অথবা পাকা হতে পারে ]
গ্রাম্য রাস্তা | বসন্তের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য খুব সুন্দর |
রাস্তার দিকের ঘর থেকে গানের রেওয়াজ শোনা যাচ্ছে | ভৈরবী সুর |
বসন্তের প্রাকৃতিক পরিবেশকে সুর যেন এক আলাদা মাদকতায় আচ্ছন্ন করে রেখেছে |

12) INT. BIDISHA‘S HOME - EARLY MORNING
ঘরের মধ্যে বিদিশা এক মনে গানের রেওয়াজ করছে |
রাস্তার দিকে জানালা খোলা |
প্রথমে জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখানো হবে |
এরপর Zoom out করে ভিতরের পরিবেশ দেখানো হবে |
হারমোনিয়াম বাজিয়ে বিদিশা রেওয়াজ করছে |
PAN করে কিছুক্ষণ বিদিশার রেওয়াজ দেখানো হবে |
[ রেওয়াজ-এর সাথে রিলেটেড কোনো গানের কথা থাকতে পারে ]

13) EXT. CONTINUE
এরপর আবার বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখানো হবে সুরের সাথে |
ভোরের জনশূন্য রাস্তা | শিমুল ফুলের বাহার | রাস্তার দপুাশে বাটুই ফুল | পাখিদের আনাগোনা |
এসবই দেখানো হবে ভৈরবী সুরের সাথে | সুরের একদম শেষে দেখানো হবে —ছোট্ট আজাদ রাস্তার পাশে এক গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে বিভোর হয়ে গানের রেওয়াজ শুনছে । সবার অলক্ষে লকিুকিয়ে কিছু করলে যেমন হয়– তেমন এক্সপ্রেশন
তার চোখে মুখে | শেষ করা হবে --আজাদ এরপরেও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে ।
চোখের চাউনিতে তার লাজকুতা ধরা পড়ে |

14) INT. AJAD’S HOUSE - NOON
আজাদ(15) চুপচাপ বারান্দাতে বসে একমনে |
[ব্যাকগ্রাউন্ডে বিদিশার গানের সুর বাজতে থাকবে ]
ফাতেমা এক বালতি জল নিয়ে রান্নার ঘরে ঢুকছে |
বারান্দাতে আজাদকে দেখে বলতে থাকে ….

ফাতেমা
আব্বা কোন মাঠে গিয়েছে ?
ডেইকে নিয়ে আয় –
ভাত হই গিয়েছে |
আজ আমার অনেক কাজ |
আজাদ একমনে বসে থাকে | কোন প্রতিক্রিয়া দেখায় না |
কিছুক্ষণ পরে ফাতেমা আবার চিৎকার করে বলে —-
তোরে একটা কথা বইলেছি
কানে ঢোকে না…?
আজাদ কোন কথা না বলে ধীরে ধীরে উঠে চলে যায়
[ মখেুখের এক্সপ্রেশন একই থাকবে ]

15) EXT. ON THE ROOD - EVENING
আজাদ (15) কিছু ছাগল নিয়ে বাড়ি ফিরছে এক মনে । হাতে কোন গাছের ডাল | মাঝে মাঝে ডাল উচিয়ে ছাগলের লাইন সোজা রাখছে |
কিছুক্ষণ পর সে পিছনে ছাগলের ডাক শুনতে পায় | পিছনে ফিরে সে দেখতে পায়— বিদিশা একটা ছাগলের দড়ি ধরে টেনে রাখার চেষ্টা করছে । ছাগল দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে |
আজাদ দেখে খুশি হয় | লজ্জাও পায় |
ফিরে এসে বিদিশার হাত থেকে ছাগলটাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় | দজুনেই চোখে চোখ রাখে |
[ব্যাকগ্রাউন্ডে ইমোশনাল কোনো মিউজিক বাজানো যেতে পারে ]
আজাদ ছাগল নিয়ে চলে যাচ্ছে আর মাঝে মাঝে পিছনে ফিরে বিদিশাকে দেখছে |
বিদিশাও স্থির ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে |
[ দজুনেরই এক্সপ্রেশন ভীষণ রোমান্টিক ]

16) EXT. ON THE ROOD - AFTERNOON
আজাদ(15) স্কুল থেকে ফিরছে স্কুল ড্রেসে |
পিঠে স্কুল ব্যাগ | সাইকেল না চালিয়ে হাঁটতে হাঁটতে |
বিদিশাও ইস্কুল থেকে ফিরছে সাইকেল চালিয়ে । রাস্তাতে আজাদকে দেখে বিদিশাও সাইকেল থেকে নামে । বিদিশা পিছন পিছন হাঁটতে থাকে আজাদের মতই |

17) EXT. BESIDE RIVER - AFTERNOON
আজাদ(15) নদীর পাড়ে বসে মাছ ধরছে বরশি দিয়ে | কিছুটা দূরে বিদিশা দাঁড়িয়ে |
[ বিদিশা কোনো গাছে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে ]
বিদিশা মাছধরা দেখছে |
মাঝে মাঝে দজুন দজুনের দিকে তাকায় | মুখে মিষ্টি হাসি |

18) EXT. CONTINUE WITH (17)
ফাতেমা এক মনে রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছে | হাতে বাঁশের লাঠি | লাঠির মাথায় কাচি বাধা | ছাগলের জন্য পাতা কাটতে যাচ্ছে | অন্য হাতে খালি ঝুড়ি |
যেতে যেতে আজাদ ও বিদিশাদের দেখতে পায় |
ফাতে মা থমকে দাঁড়ায় | চোখে মখেুখে অস্বস্তিকর একটা ভাব প্রকাশ পায়।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে |
এরপর আর না এগিয়ে আবার বাড়ির দিকে হাঁটতে শুরু করে রাগে রাগে |
[ হাঁটার গতি একটু বেশি হবে ]

19) EXT. BIDISHA ’S HOUSE - EVENING
সন্ধ্যাবেলায় বিদিশা সাজবাতি দিয়ে সন্ধ্যা দিচ্ছে । সাজবাতি নাড়তে নাড়তে রাস্তা পর্যন্ত এসছে ।
প্রণাম করে যখন মাথা তুলে রাস্তার দিকে তাকায় –বিদিশা আজাদ(15)-কে দেখতে পায় ।
আজাদ ধীর গতিতে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ।
দজুন দজুনকে দেখে । দজুনেরই মুখে চাপা মিষ্টি হাসি ।

20) EXT. NEAR RIVER - AFTERNOON
আজাদ(15) ও রফিক নৌকায় করে মাছ ধরতে যাবে তার প্রস্তুতি চলছে ।
আজাদ নৌকায় বসে জল সেচছে । রফিক কিছু পাতা বর্শি হাতে নিয়ে পাড়ে দাড়িয়ে আছে । জল সেচতে সেচতে আজাদ বলতে থাকে ….

আজাদ
আব্বা… আজ সব বর্শি আমি ফেইলব
তুমি কিছু বইলবা না

রফিক
ঠিক আছে বাজান
তাই হবে
দেইখব কেমন মাছ হয়..!
পড়ন্ত আলোতে দজুনের নৌকায় চড়া দেখানো হবে ।
আজাদ বর্শি ফেলছে পাড়ের কাছাকাছি – আর রফিক ধীরে নৌকা চালাতে থাকে ।
[ কিছুক্ষণ এই দৃশ্য দেখানো হবে ]
বর্শি ফেলতে ফেলতে আজাদ বলতে থাকে …..

আজাদ
আব্বা —কাল স্কুল ছুটি
রং খেলা
কাল বইও পড়তে নাই
[ হাসতে থাকে ]

রফিক
সারাদিন তাইলে কি করবি ?
মাছ ধরবি ?
[ হাসতে থাকে ]

আজাদ
আব্বা… আম|রও খুব রং খেলতে ইচ্ছা করে ।
…. বোনেরও ।
সবাই কত আনন্দ করে !
আমাদের রং খেলা নেই কেন আব্বা ?
আমরা মসুলমান - তাই ?
রফিক চুপ করে থাকে । এক্সপ্রেশনে বোঝা যাবে তার অসহায়তা ।
[ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর রফিক বলে… ]
উৎসব সবার
মন চাইলে তুমিও খেলতে পারো
আল্লাহ- ভগবানের মধ্যে কোন বিভেদ নাই
যত বিভেদ আমাদের মধ্যে
বইতে পড়ো নাই ?
যে আল্লাহ —সেই ভগবান ।

21) EXT. BESIDE ROAD - MORNING
আজ দোল পূর্ণিমা । চারিদিকে বসন্তের ছবি । রাস্তাতে ছোটাছুটি করে ছেলেমেয়েরা রং খেলছে । আবির ও রং মেখে কিছু মানষু বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে এমন দৃশ্য দেখানো হবে ।
প্রকৃতির মধ্যেও রঙের মেলা — শিমুল-পলাশ ফুলের বাহার ।
[এসব দেখানোর সময় বসন্ত উৎসবের কোনো রবীন্দ্র সংগীত বা মিউজিক বাজানো যেতে পারে ব্যাকগ্রাউন্ডে ]
রাস্তার পাশে কোথাও দাঁড়িয়ে আজাদ(15) বাচ্চাদের রং খেলা দেখছে আর হাসছে । আজাদকে কেউ রং দিচ্ছে না মুসলমান ছেলে বলে । ভালো পোশাক পড়ে তাই সে নিশ্চিন্তে দাঁড়িয়ে আছে ।
এর মধ্যে বিদিশা আজাদের মাথায় একমুঠো আবির ছুঁড়ে মারে ।
[আজাদের মাথায় আবির ছুড়ে মারা দেখানো হবে, বিদিশাকে দেখানো হবে না প্রথমে ।
আজাদের মাথায় আবির কে ছুঁড়ে মারলো -–এটা দেখার জন্য যখন আজাদ পিছনে ফিরে তাকায় সে দেখতে পায় –বিদিশা দৌড়াতে দৌড়াতে ফিরে যাচ্ছে | পরনে বাসন্তী রঙের শাড়ি । খোপাতে পলাশ ফুল । মাঝে মাঝে বিদিশা পিছনে ফিরে তাকায় হাসি মুখে ।
ঘটনাটি আকস্মিক হলে ও আজাদের এক্সপ্রেশন ছিল ভীষণ রোমান্টিক । এতটাই খুশি হয় যে সে মাথা থেকে আবির ঝেড়ে না ফেলে একইভাবে রেখে দেয় । মুখে তার মিষ্টি হাসি ।
[ কিছু ক্লোজ ও মিড শট নিতে হবে আজাদের এক্সপ্রেশন ভালো  করে দেখানোর জন্য ]

22) INT. AJAD’S HOUSE - NOON
মাথায় আবির ভর্তি করে আজাদ(15) বাড়িতে আসে । বারান্দাতে আজাদের বাবা রফিক । আজাদের এই অবস্থা দেখে হাসতে থাকে ।
আজাদ বারান্দাতে এসে বসে । কিছুক্ষণ এভাবে বসে থাকে ।
ফাতেমা রান্নাঘরে রান্না করছে । আজাদের এমন অবস্থা দেখে খুশি হয়নি ।
রান্না থামিয়ে বিরক্তির সাথে আজাদকে দেখতে থাকে ।
আজাদকে বলতে থাকে ………

ফাতেমা
আবির মেইখে এইছ..!
শখ যদি মেইটে থাকে
যাও এবার স্নান করো গিয়ে
[ লিটিল ব্রেক ]
কিছুই বলার নেই আমার

ফাতে মা জোরে জোরে খুন্তি নাড়তে থাকে ।
আজাদ কিছুক্ষণ মন ভার করে বসে থাকে ।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও সে ধীরে ধীরে উঠে চলে যায় ।
ফাতেমা রান্না থামিয়ে সব লক্ষ্য করে ।
রফিক মৃদু হেসে চলেছে ।
রফিকের হাসি দেখে ফাতেমা বিরক্ত প্রকাশ করে ………

ফাতেমা
তোমার কি খুব আনন্দ হচ্ছে ….!
কিছুনা বইলে উল্টে প্রশ্রয় দিচ্ছ
কিছুই বইুঝতে পারো না তুমি ..?

রফিক ভ্যাবাচ্যাকার মত হাসি থামিয়ে বসে থাকে ।
ফাতেমা রান্না থামিয়ে নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকে কিছুক্ষণ । হাতে খুনতি ধরা । দশ্চিুশ্চিন্তা করলে যে মন হয় ফাতেমার এক্সপ্রেশন ঠিক তেমনি হবে ।

23) EXT. BANK OF THE RIVER - AFTERNOON
স্নানের ঘাটে আজাদ(15) চুপচাপ বসে । মাথায় তখনও আবির । সে এমন ভাবে বসে আছে যেন আবির মেখে থাকাটাই তার কাছে আনন্দের । স্নান করে ধুয়ে ফেলতে চায় না ।

24) INT. AJAD ’S HOME - NIGHT
ঘরের মধ্যে ফাতেমা –আজাদ(15) ও মেয়েকে নিয়ে শুয়ে আছে ।
রফিক বারান্দাতে শুয়ে ।
ফাতেমা শুয়ে থাকলেও চোখে ঘুম নেই । তাকিয়ে আছে । কিছু সময় পর সে উঠে বসে । কিছুক্ষণ বসে থাকার পর ধীরে ধীরে বাইরে শুয়ে থাকা রফিকের কাছে আসে । গায়ে হাত দিয়ে ফিসফিস করে ফাতেমা রফিককে ডাকতে থাকে ……

ফাতেমা
আজাদের বাবা – শুনছো ?
…. এই শুনছো ?

ঘুমের মধ্যে এভাবে হঠাৎ ডাক শুনে রফিক ভ্যাবচকিয়ে যায় । ধরফরিয়ে উঠে আধোকাত হয়ে শুয়ে বলতে থাকে …

রফিক
কি হইছে ?
এত রাইতে …?

ফাতেমা
তোমার আর কি হবে ?
যত মরণ তো আমার
তোমাদের জন্যে রাইতে ঘুম আছে আমার ?

রফিক
আরে ধুত কি হইছে —- আসল কথাটা বলো ।
সমস্যাটা কি ?

ফাতেমা
তুমি কিছু আন্দাজ কইরতে পারতেছ – কি হচ্ছে ?

রফিক
কি ?
আমি তো কিছুই বইুঝতে পারতেছি না ।
তুমি কি বইলতে চাইছো এত রাইতে !

ফাতেমা
আজাদের গতিবিধি দেইখা কিছু অনমুান কইরতে পারতেছ ?
নাকি পারতেছ না ?

রফিক
কেন আজাদ আবার কি করলে ?
ও তো ঠিকই আছে
আমার চোখে ভুল কিছু পরে নাই আজাদকে দেইখা |

ফাতেমা
শুনো আজাদের আব্বা
তোমারও একটা কথা স্পষ্টভাবে আমি বইলা রাখি —
তোমাদের এই বাপ-ছেলের জইন্য আমাদের সব হারাইতে হবে ।
গ্রামের কেউ অন্ধ না – আর বোকাও না |
জানাজানি হইলে আমাদের কেউ আস্ত রাইখবনা |
এই গ্রামে সবাই হিন্দু–
তুমি কোথাও আশ্রয় পাইবা না |
তোমার পাশেও কাউরে পাইবা না |
সবাই আমাগো জ্যান্ত কবর দিব |

রফিক
এত রাতে তুমি কি সব বকতেছ–!
আমি তো কিছুই বইুঝা উঠতে পারতেছি না |
আজাদ কি কিছু ভুল করতেছে ?
কেউ কিছু বইলছে তোমারে ?

ফাতেমা
তোমারে কিছু বুঝাইতে পারবো না |
স্পষ্টভাবে একটা কথা তোমারে বইলা রাখি —-
এখানে আমি আর থাইকবো না |
যত তাড়াতাড়ি পারো আমাদের লইয়া
অন্য কোথাও যাওয়ার ব্যবস্থা করো |
( একটু থেমে )
সবাই চইলা গেছে
শুধু ভিটার টানে তুমি থাইকা গেলে |
কি হইল –!
আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে আর ভালো লাগতেছে না ।
( একটু কেঁদে কেঁদে )

রফিক
দেখো আজাদের মা –তুমি কি অনমুান করতে পারতেছ –
আমি জানি না |
আজাদ খুব ভালো ছেলে |
ওর জন্য আমাদের কোন বিপদ হইবে –
আমি বিশ্বাস করিনা |
( একটু অপেক্ষা)
তুমি যখন মন পাল্টাইয়া ফেলছো –এখানে আর থাকবা না..
আমি লইয়া যাওয়ার বন্দোবস্ত করতেছি |
ভয় পাইও না ….দেখি কি করা যায় |
কিছুদিন আমারে সময় দাও |

25) INT. AJAD ‘S HOME - CONTITUE
আজাদ(15) ঘরে শুয়ে আছে | সে সব কি ছুশুনতে পায় | অন্ধকারে সে তাকি য়ে থাকে | দচুচোখে জল |
হাত দি য়ে মখু চে পে রাখে কান্নার আওয়াজ থামাতে |
( ব্যাকগ্রাউন্ডে এক বি ষাদে র সুর বাজতে থাকবে )

26) EXT. NEAR RIVER - AFTERNOON
আজাদ(15) নদীর পাড়ে বসে বি ষন্ন দষ্টিৃষ্টিতে চুপচাপ বসে আছে | নদীতে ন ৌকা নি য়ে এক মাঝি বাড়ি ফি রছে | আজাদ
উদাস হয়ে বসে আছে |
সূর্যাস্তে র সাথে আজাদ যে ন এক অন্ধকারে র ডুবে যাচ্ছে ।
সন্ধ্যার আল োতে আজাদে র এক্সপ্রে শন খুবই বি ষন্ন হবে |
[ ব্যাকগ্রাউন্ডে বি দি শার গাওয়া ক োন গান বাজতে থাকবে দুচার লাইন

গান :
আমি অপার হয়ে বসে আছি

27) EXT. BESIDE FIELD - AFTERNOON
একটা গাছে র আড়ালে বসে আজাদ(15) ফঁুপি য়ে ফুপি য়ে কাঁদছে | অনে কটাই নি র্জন পরি বে শ |
গাছে র অপরপাশে বি দি শা দাঁড়ি য়ে | আবে গ ভরা গলাতে আজাদ বলতে থাকে …
.

আজাদ
[ কাঁদতে কাঁদতে ]
আমরা চইলে যাচ্ছি |
আর আইসব ো না–
আর দে খা হবে না |

[ প্রথমে শুধুআজাদকে ই দে খান ো হবে | বি দি শাকে দে খান ো হবে না |
বি দি শার V.O. হবে –]

বিদিশা
ক োথায় চলে যাবে ?

আজাদ
জানি না

বিদিশা
কে ন– কি সে র জন্য চলে যাবে ?

আজাদ চুপ করে থাকে ক োন কথা না বলে | ফুুপি য়ে ফুপি য়ে কাঁদতে থাকে |

বিদিশা
আর আসবে না ?

বি দি শা খুব হতাশার সুরে প্রশ্ন করে |
আজাদ শুধুকাঁদতে ই থাকে |
কি ছুক্ষণ পর বি দি শা আবার বলতে থাকে —-

বিদিশা
সবাই চলে যাক —তুমি যাইও না আজাদ
তুমি এখানে ই থে কে যাও

আজাদে র কাছ থে কে ক োন উত্তর না পে য়ে বি দি শা আবার প্রশ্ন করে ….

বিদিশা
কি হল ? তুমি একা থাকতে পারবে না আজাদ ?
কে ন পারবা না ?

আজাদ ক োন উত্তর না দি য়ে সমানে কাঁদতে থাকে |
বি দি শা আবার বলতে থাকে …..
তুমি যে ওনা আজাদ | ( ভাঙ্গা গলায়)
আজাদ বি দি শার অনরুরোধ শুনে আর থাকতে পারছে না | আজাদ হাটুর উপর মাথা রে খে ফুপি য়ে ফুপি য়ে কাঁদছি ল | হঠাৎ
সে উঠে দাঁড়ি য়ে ধপ ধপ করে হাঁটতে শুরু করে | চ োখে মখেুখে রাগ ও কান্না দইু ধরা পড়ে |
[ অসহায়তা ব োঝাতে ]
বি দি শা আজাদে র পায়ে র শব্দ শুনে ভীষণ ভে ঙ্গে পড়ে | বি দি শা ও কাঁদতে শুরু করে |
গাছে র আড়ালে দাড়িঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে আর বলতে থাকে —

বিদিশা
তুমি যে ওনা আজাদ — তুমি যে ও না |
বি দি শার কান্নার আওয়াজ আর ো বাড়তে থাকে | আজাদ সমানে হাঁটতে থাকে |
বি দি শা উচ্চস্বরে আবার বলতে থাকে —

বিদিশা
সবাই যাক –তুমি যে ও না
ত োমাকে নি য়ে গে লে ও –তুমি চলে এস ো আজাদ |
তুমি ওখানে থে কে যে ও না –-তুমি চলে এস ো |

বি দি শা কথাগুল ো বলতে বলতে কান্নায় ভে ঙে পড়ে | নি জে কে আর সামলাতে পারে না | কাঁদতে কাঁদতে সে ওখানে ই বসে
পড়ে | মখেুখে হাত দি য়ে চে পে ধরে কান্না শব্দ আটকাতে |
[এভাবে বি দি শাকে কি ছুক্ষণ দে খান ো হবে ]
আজাদ কথাগুল ো শুনতে পায় | সে হঠাৎই দ ৌড়ান ো থামি য়ে দাঁড়ি য়ে পড়ে | কি ছুক্ষণ দাঁড়ি য়ে থাকে |
[ আজাদে র মনে র উত্তে জনা প্রকাশ করার জন্যই কখন ো দ ৌড়ান ো, কখন ো দাঁড়ান ো বা ধীরে ধীরে হাটা দে খান ো হবে ]
[ বি দি শার এই কথাগুলি আজাদে র (৬০) স্মৃতি তে ফ্ল্যাশব্যাক করা হবে । ]

28) INT. AJAD ’S HOME - MID NIGHT
ঘরে খুব অল্প আল ো জ্বলছে হারি কে ন | আজাদ(60) ঘরে র মে ঝ োতে শুয়ে | হঠাত্ আজাদ ঘুম থে কে ধরফরি য়ে উঠে বসে |
ফ্লাসবাকে র পরে কি ছুটা সামলে নি য়ে পাশে রাখা পাত্র থে কে একটুজল খায়। একটা বি ড়ি ধরি য়ে টানতে থাকে চুপচাপ |
[ স্বপ্নে র রে স ব োঝাতে এসব দে খান ো হবে —ক োন ডায়লগ না রে খে ]

29) INT. AJAD ’S HOME - EVENING
আজাদ (১৫) নদীর পাড় থে কে বাড়ি প্রবে শ করছে | বাড়ি তে সবাই চুপচাপ | ঘরে র মধ্যে আল ো জ্বলছে |
আজাদে র বাবা বারান্দাতে চুপচাপ বসে আছে ন | আজাদ বাবার কাছে এসে বসে - ক োন কথা না বলে |
[ বসে থাকে কি ছুক্ষণ ]
বাইরে বে ধেঁধে রাখা একটা বড়িুড়ি ছাগল | আজাদ বাবার কাছ থে কে উঠে এসে ওই ছাগলটার গলা থে কে দড়ি খুলে দে য় |
তারপর কাঁদতে থাকে |
অন্ধকার ঘনি য়ে আসে |
[ ছাগলটাকে ছে ড়ে দে ওয়া সি ম্বলি ক | এলাকা ছে ড়ে চলে যাওয়াকে ব োঝান োর জন্য ]

30) INT. AJAD ’S HOME - MID NIGHT
আজাদ( 60) ঘরে শুয়ে আছে | এসব পুরন ো স্মৃতি আজাদকে ভীষণভাবে পীড়া দে য় | তার দচুচোখ ভরে জল আসে । 29.
INT : - এর শে ষটা যে অন্ধকার দি য়ে শে ষ হবে –সে ই অন্ধকারে ই বর্তমান আজাদে র জলভরা চ োখ ভে সে উঠবে | মদৃ ু
আল োতে ও আজাদে র বি ষন্নতা প্রকাশ পাবে । [ ক োন মে ল োডি মি উজি কে র সাথে এই দশৃ ্য দে খান ো হবে ]

31) EXT. NEAR RIVER - AFTERNOON
আজাদ (15) এক মনে ছি প দি য়ে মাছ ধরছে | হঠাৎ জলে একটা ঢি ল পড়ে |
আজাদ খানি কটা বি রক্ত হয়ে উঠে দাঁড়ায়। কে ঢি লটি ফে লল– দে খার জন্য এদি ক-ওদি ক তাকায়। সে দে খতে পায়
বি দি শা দ ৌড়ে পালি য়ে যাচ্ছে | মখেুখে হাসি | মাঝে মাঝে পি ছনে ফি রে আজাদকে দে খছে |

32) EXT. NEAR RIVER - AFTERNOON
আজাদ (60) বসে এক মনে ছি প দি য়ে মাছ ধরছে ,| মনে র মধ্যে তার পুরন ো স্মৃতি ফি রে আসে |
স্মৃতি টা তার আবে গকে এতটাই প্রভাবি ত করে যে সে মাছ ধরা থে কে হঠাৎই উঠে দাঁড়ায় | তার মনে হচ্ছে —বি দি শা যে ন
জলে ঢি ল ছুড়ে মে রে ছে |
যখন সে তার ভ্রম বঝু তে পারে — ধীরে ধীরে আবার বসে পড়ে |
এরপর গান শুরু হয়–

গান :
ভ্রমর কইয়ো গিয়া

[ বি দি শার গাওয়া গান ]
ব্যাকগ্রাউন্ডে যে সব দশৃ ্য দে খান ো হবে —-

33.1) EXT. RIVER - EVENING
বাধাহীন ন ৌকা ঘুরপাক খে তে খে তে স্র োতে ভে সে যাচ্ছে ধীরগতি তে | নদীর পাড়ে আজাদ(60) বসে থাকবে |

33.2) EXT. RIVER - EVENING
হাসেঁসের এক পায়ে দড়ি বাঁধা | নদীর পাড়ে বে ধেঁধে রাখা হয়ে ছে |

33.3) EXT. ON THE ROAD BESIDE BIDISHA’S HOUSE - EVENING
দরজা জানালা বন্ধ ঘর | জরাজীর্ণ পরি বে শ | রাস্তা দি য়ে আজাদ ধীর গতি তে হে ঁটে চলে ছে ক োন দি কে না তাকি য়ে |

33.4) EXT. UNDER A TREE - EVENING
ঝরা পাতা | নে রা গাছ |

33.5) EXT. RIVER - EVENING
আজাদ(60) ন ৌকা চালাচ্ছে খুব ধীর গতি তে |

33.6) EXT. BESIDE SAME TREE - EVENING
যে পরি বে শে আজাদ বি দি শার সাথে শে ষ কথা হয়ে ছি ল —সে ই পরি বে শ শনূ্যতায় ভরা |
আজাদ(60) সে ই গাছে হে লান দি য়ে দাঁড়ি য়ে আছে |

33.7) INT. AJAD’ HOUSE - EVENING
বারান্দাতে হারি কান জ্বলছে | আজাদ(60) চুপচাপ বারান্দাতে খুটিঁ তে হে লান দি য়ে বসে আছে |

34) INT: AJAD’S HOUSE - MORNING
আজ দ োল পূর্ণি মর্ণি া | মন ভার করে আজাদ(60) বারান্দাতে একা বসে | বাইরে দ োল উৎসবে র দশৃ ্য গুলি দে খে আজাদকে
নি জে র স্মৃতি টা খুব কষ্ট দি চ্ছে |
[আজাদে র POV থে কে যে দশৃ ্যগুলি দে খান ো হবে ]

34.1) EXT. ON THE ROAD - MORNING
ছ োট্ট ছে লে মে য়ে রা রাস্তায় রঙ নি য়ে দ ৌড়াদ ৌড়ি করছে |

34.2) EXT. ON THE ROAD, MORNING
মাথায় আবি র নি য়ে কি ছুমানষু চলাফে রা করছে রাস্তায় |
[ ক্যামে রা আজাদে র জায়গাতে সে ট করতে হবে | আজাদ বারান্দা থে কে যতটুকু দে খতে পাবে —সে টাই তুলতে হবে ]
আজাদ দশৃ ্যগুলি দে খছে খুব উদাস ভঙ্গি তে |
[ ব্যাকগ্রাউন্ডে বি দি শার গাওয়া ক োন গান বাজতে থাকবে । দুচার লাইন |
রবীন্দ্রসঙ্গীত হতে পারে ]

35) VARIOUS LOCATION - EVENING
আজাদে র আবি র্ মাখা স্মৃতি টা আজ সারাদি ন আচ্ছন্ন করে রে খে ছে আজাদকে |
ব্যাকগ্রাউন্ডে গানে র সাথে দে খান ো হবে —-

35.1) UNDER A SIMUL TREE - EVENING
শি মলু গাছে র নি চে দাঁড়ি য়ে আজাদ(60) বি ভ োর হয়ে শি মলু ফুল দে খছে |

35.2) SAME LOCATION OF (35.1)
বি দি শা বাসন্তী রং এর শাড়ি পরে গানে র সাথে নাচ করছে | খ োপায় গুজা পলাশ ফুল |
[ ILLUSION ]

35.3) EXT. NEAR RIVER - EVENING
নদীর পাড়ে আজাদ (60) বসে আছে | সন্ধ্যার আল োতে আজাদকে খুবই অসহায় লাগছে ।
[ গান ও মি উজি কে র সাথে সন্ধ্যা নে মে আসে ]
স্মৃতি ও একাকি ত্বে র মধ্যে ই আজাদ আজ সারাদি ন কাটায় |

36) INT.: AJAD’S HOUSE - EVENING
ঘরে মদৃ ুআল ো জ্বে লে চুপচাপ বসে আছে আজাদ (60) |
[ কি ছুসময় এভাবে দে খান ো হবে ]
হতাশা ও একাকি ত্ব কাটান োর জন্য আজাদ ঠিক করে —সে বাউল বন্ধু– বাসুদে বে র কাছে যাবে |
কি ছুকথা বলতে পারলে নি জে কে অনে কটা হালকা করতে পারবে | একটুগান শুনলে ও তার যদি ভাল ো লাগে |
উঠে এসে আজাদ একটা পাঞ্জাবি পরে |
মাথায় মাওলানা টুপি পড়ে ঘর থে কে বে র হয় দরজা দি য়ে | বারান্দাতে হারি কে ন টা রে খে ধীরে ধীরে রাস্তার দি কে হে টে
যায় |

37) INT. BASUDEB’S HOUSE - NIGHT
অন্ধকারে আজাদ(60) বাসুদে বে র বাড়ি তে প্রবে শ করে |
বারান্দাতে একটা হারি কে ন জ্বলছে কম আল োতে |
বাড়ি তে সব চুপচাপ |
আজাদ বারান্দার কাছে এসে ডাকতে থাকে ….
আজাদ
দাদা—ঘুমি য়ে পড়লে ন নাকি ?
[ একটুথে মে ]
ভাবি .--
বাসুদেব
[একটুপরে ]
কে –আজাদ ভাই ?
আজাদ
হ দাদা —-আজাদ
ঘুমি য়ে পড়লে ন ?
বাসুদেব
দাড়ঁ াও–ভাই - —আইতাছি
ঘরে র মধ্যে আল োটা বাড়ি য়ে দে য় | পরনে র পাজামা - গায়ে গে ঞ্জি | একটা চাদর গায়ে জড়াতে জড়াতে বাইরে বে রি য়ে
আসে অন্ধে র মত হাতরাতে হাতরাতে | বারান্দায় গ োটান ো মাদরু পে তে বসতে বলে —
বাসুদেব
বস ভাই
শরীরটা আজ ভাল ো না
একটুঘুম ঘুম পাইতে ছি ল
তাই শুইয়া পড়ে ছি লাম আগে আগে ই ।
মাদরেুরে বসতে বসতে বাসুদে ব এই কথাগুলি বলছে | বসার পর একটুচুপ থাকে | আজাদ এসে মাদরেুরে বসে | এবার বাসুদে ব
আর ো বলতে থাকে —-
সন্ধ্যা বে লায় ত োমার কথাই ভাবতে ছি লাম
জয়গুরু
আজাদ
সালাম –দাদা
[ অন্যদি কে ফি রে একটুমাথা নে ড়ে ]
বাসুদেব
[আজাদে র আচরণ লক্ষ্য করে ]
দে রি দে ইখ্যা আমি ভাবলাম আজ তুমি আর আইবানা
কি শরীর খারাপ ?
[ একটুঅপে ক্ষা ]
আজাদ
না দাদা —কে মন আছি – বঝু তে পারতে ছি না
সকাল থাইকাই কে মন যে ন লাগতে ছে
ক োন কি ছুভাল ো লাগতে ছে না |
ইচ্ছা থাকলে ও আসতে পারতে ছি লাম না দাদা
মনটা কে মন ভার হইয়া আছে |
বাসুদেব
[ একটুঅপে ক্ষা ]
আজ ত ো ত োর পূর্ণি মর্ণি া —দ োল পূর্ণি মর্ণি া
[অপে ক্ষা ]
আমি জানি আজাদ– আজ ত োমার মন ভাল ো থাকব ো না |
দজু নে ই কি ছুসময় চুপচাপ থাকে | তারপর আজাদ নীরবতা ভাঙ্গে —-
আজাদ
না আইসা পারলাম না দাদা
বাসুদেব
ভাল ো করছ ো
সবকি ছুবাইধা রাখা যায়
মন বাইধা রাখা যায় না ভাই |
আসছ ো –ভাল ো হইছে
একটুকথা কইলে মন হালকা লাগব ো
ভাল ো লাগব ো |
আজাদ
[একটুঅপে ক্ষা ]
এজন্যই ত ো আইলাম –দাদা
আর পারতে ছি না মনরে বঝু াইতে |
[আবার একটুথে মে ]
ভাবি ঘুমাইয়া পড়ছে ?
বাসুদেব
হ..
আমি ও ভাল ো ছি লাম না ভাই
শরীর মন দটুটোই আজ কে মন যে ন লাগতে ছে
উদাস উদাস
দ োতারা লইয়া আজ বসতে ইচ্ছা করে নাই ।
ব ৌদি ও শুইয়া পড়ছে
[ একটুথে মে ]
কি বা করব — সারাদি ন কাজ লইয়া থাকে |
বি শ্রাম নাই |
সংসারই তার জগৎ — তার সন্তানে র মত ।
[একটুথে মে ]
কি আর বলব ো ভাই ত োমারও— বললে তারে ছ োট করা হয় |
ত োমার ভাবি খুব ভাল ো মাইয়া
আমার মত এক আধা অন্ধ খ্যাপারে লইয়া জীবন কাটাইয়া দি ল
ক োন আক্ষে প নাই
ভাবি র জন্য আমি বাইচা আছি
কি পাইল ো আমারে লইয়া
[একটুকে ঁদে কে ঁদে ]
কি দি লাম তারে আমি ..
কি ছুক্ষণ ফঁুপি য়ে কাঁদতে থাকে | নি জে কে সামলে নি য়ে আবার বলতে থাকে —
আমি ভাইগ্যবান– খুবই ভাইগ্যবান
ভগবান আমারে ভাল ো দষ্টিৃষ্টি দে য় নাই—
কি ন্তু তার চ োখ দি য়াই আমি জগত দে খতে পাই
[কে ঁদে কে ঁদে ]
38) INT. BASUDEB’S HOUSE - CONTINUE
ঘরে র মধ্যে সরলা শুয়ে আছে | বাসুদে বে র কথা সব শুনতে পায় | আবে গে তার দুচ োখ জলে ভরে যায় | নীরব কান্নার
মধ্যে তার গভীর ভাল োবাসা প্রকাশ পায়।

39) INT. BASUDEB’S HOUSE - CONTINUE

আজাদ
দাদা— তুমি সত্যি ই ভাগ্যবান
এত সুখ শান্তি তুমি আর ক োথায় পাইতা...!
আমার মত চ োখ থাকলে ও পাইতানা |

বাসুদেব
[ মাথা নে ড়ে কাঁদতে থাকে ]
তুমি ঠিকই বলছ— আজাদ
আমি সত্যি ই ভাগ্যবান |
[একটুথে মে ]
কত জনমে র পূর্ণ কইরা ত োমার ভাবি রে পাইছি —
এ জীবনে কত বড় প্রাপ্তি আমার —-!
আমার আর ক োন চাহি দা নাই –আক্ষে পও নাই |
তারে লইয়াই আমার সবকি ছু—- আমার জগত্
[ আবার একটুকাঁদতে থাকে ]
আল্লার কাছে দ োয়া মাঙ্গ ভাই—-
এই ভাবে ই যে ন দজু নে জীবন পার কইরা দি তে পারি
কান্না একটুসামলে নি য়ে আবার বলতে থাকে —-
ভাই আজাদ—
তুমি ও ভাগ্যবান
আল্লাহ ত োমারও যা দি ছে —জগতে সবাইরে তা দে য় না |
আমি সব বঝু তে পারি —--
আল্লাহ ত োমারও প্রে ম দি ছে – মন দি ছে
শুধুপ্রে ম লইয়া একটা আস্ত জীবন কাটাইয়া দি লা….!
কজন পারে ...!
[ কাঁদতে থাকে ]
প্রে মহীন জগতে বাইচা থাইকা কি লাভ...?
শুধুবাইচা থাকা হয় |
কত বড় জগৎ ত োমার —সীমাহীন আকাশ ..!
ত োমার জগতে তুমি মালি ক— এর ক োন ভাগীদার নাই
এর থাইকা বড় পাওয়া আর কি হতে পারে –জীবনে !
তুমি জি ইতা গে ছ ো— আজাদ
আশীর্বাদ করি — তুমি বারবার জনম লইবা এমন সুন্দর মন লইয়া ।

আজাদ মন দি য়া কথা শুনছে ক োনদি কে না তাকি য়ে | ক োন কথা না বলে |
আবে গঘন এই কথাগুলি শুনতে শুনতে তার দুচ োখে র জল বইতে থাকে |
কি ছুসময় এভাবে চলতে থাকে | বাসুদে ব ও চুপচাপ বসে থাকে |
ব্যাকগ্রাউন্ডে খুব দরদী ক োন বাশি র সুর বাজাতে থাকবে |
কি ছুক্ষণ অপে ক্ষার পর বাসুদে ব আবারও বলতে থাকে —--

বাসুদেব
কাইন্দ ো না আজাদ
ত োমার এই জগত লইয়া তুমি সুখে ই থাকবা
[একটুথে মে ]
, আজ শরীরটা ভাল না
মনটাও কে মন যে ন লাগতে ছে |
আজ গান আর আইতাছে না |
আইছ ো যখন —আজ ভাবীর একটা গান শ োন ো |
মনটা ভাল ো লাগব ো |
[ একটুঅপে ক্ষা ]

বাসুদেব
সরলা— শুনছ ো ? একটুবাইরে আইসবা..?
আজাদ আইসছে |

সরলা
[একটুসামলে নি য়ে ]
আইতাছি

কি ছুসময় পরে সরলা ঘর থে কে বাইরে আসে |
মাদরেুরে বসতে বসতে আজাদ কে জি জ্ঞাসা করে —

সরলা
ভাই কে মন আছ ো ?

আজাদ ক োন উত্তর না দি য়ে চুপচাপ বসে থাকে | আজাদে র এক্সপ্রে শন আগে র মতই থাকবে |
কি ছুটা সময় পর বাসুদে ব কথা বলে —

বাসুদেব
ওরে আজ কি ছুজি গাইও না
ওর মনটা আজ ভাল ো না
ওরে আজ একটুএকা থাকতে দাও |
[ একটুথে মে ]
আজ তুমি একটা গান কর ো
আমরা শুইনব ো—

সরলা কি ছুক্ষণ চুপ করে থাকে | তারপর দে ওয়ালে ঝ োলান ো দ োতারা এনে বাসুদে ব কে দে য় |
বাসুদে বে র পাশে বসে গান শুরু করে —

গান :
ভ্রমর কইও গি য়া
শ্রীকৃষ্ণ বি চ্ছে দে র অনলে
আমার অঙ্গ যায় জ্বলি য়া রে
ভ্রমর কইও গি য়া…….

গানে র লে খা ও সুর এতটাই বি ষাদে ভরা– যা শুনে বাসুদে বও কাঁদতে শুরু করে মাথা নে ড়ে |
[ কান্না শব্দ হবে না শুধুএক্সপ্রে শন দে খাতে হবে ]
বাসুদে ব দ োতারা না বাজি য়ে পাশে রে খে দে য় |
আজাদও নি রবে কাঁদতে থাকে |
গানে র আবে শ এতটাই হৃদয় স্পর্শই ছি ল যে আজাদ আর বসে থাকতে পারল ো না |
গান শে ষ হওয়ার আগে ই উঠে চলে যায় জল ভরা চ োখে |

40) EXT. OPEN FIELD - MID NIGHT
পূর্ণি মর্ণি ার চাঁদে র আল োতে এক র োমান্টি ক পরি বে শ |
আজাদ(60) একা রাস্তা দি য়ে হে ঁটে চলে ছে ।
[একই সাজ থাকবে । ]
হাতে এক থালা আবি র | খুব ধীরগতি তে হাঁটতে থাকবে |
যে জায়গাতে আকাশে পূর্ণি মর্ণি ার চাঁদ স্পষ্টভাবে দে খা যাবে – সে ই জায়গাতে আজাদ এসে দাঁড়ায় ।
অঝরে কাঁদতে কাঁদতে সে নি জে র শরীরে - মাথায় আবি র মাখতে থাকবে |
[ব্যাকগ্রাউন্ডে সরলার গান বাজতে থাকবে ]
আজাদে র আবি র মাখা স্থি র ছবি আর সরলার গান দি য়ে কাহি নীটা শে ষ হবে |

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!