FAMILY EPISODE 1

<<GO BACK        ENGLISH        NEXT>>

বাংলা ওয়েব সিরিজ : ফ্যামিলি

পর্ব ১ : বউ

একটি রোমান্টিক গান দিয়ে শুরু করা মানেই যে সুখী সমাপ্তি, তা নাও হতে পারে ।

পরিচালক ও প্রযোজক : সঞ্জীব নাথ

 

চিত্রনাট্য

একজন যুবক এক মহিলা কে বাম হাত দিয়ে তার মাথা আর ডান হাত দিয়ে শরীর ধরে রেখে জোর করে ঠোঁটে কিস করার চেষ্টা করছে । দুজনেই ভালো পোশাক পরে আছে । মহিলা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে । যুবক জোর করে কিস করার চেষ্টায় ব্যস্ত ।
মেয়েটি নিজের হাত দিয়ে কিছু খোঁজার চেষ্টা করছে ড্রেসিং টেবিল এর তাকে এ, আর হঠাৎ করে একটা লিপস্টিক তুলে নেয় তাক থেকে । আর তক্ষুনি সে লিপস্টিক খুলে নিজের ঠোঁটে লাগিয়ে নেয় । তারপর হাসতে শুরু করে, কারণ ছেলেটি আর কিস করতে পারে না নিজের ঠোঁটে লিপস্টিক এর রং লেগে যাবার ভয়ে । ছেলে টি কিস করার চেষ্টা বন্ধ করে, আর কৃত্তিম হার স্বীকার করে বৌ-এর শাড়ির আঁচল দিয়ে নিজের ঠোট মোছে আলতো করে ।

তারপর স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কথা বলতে বলতে পার্টিতে যাবার প্রস্তুতি নিতে থাকে । আর ছেলেটি ভুল শব্দ দিয়ে একটা হিন্দি গাইতে শুরু করে ।

ছেলেটি পোশাক পরে নিজের চুল সেট করতে থাকে । বৌ শাড়ি পরে আয়নার সামনে সাজতে থাকে । বৌ-এর মাথার চুলে ভোলিউমাইজড শ্যাম্পুর ছাপ স্পষ্ট, আর হাসব্যান্ড মাথা উঁচু করে সাইড কাটিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখে মাঝে মাঝে । সুস্থ আর সুন্দর ভাবে তারা রেডি হতে থাকে । বৌটি নিজের শরীর আর শাড়ি দিয়ে আড়াল করে হাসব্যান্ডকে আয়নায় দেখতে আড়াল করতে থাকে দুস্টুমি করে । দুজনেই পার্টির প্রস্তুতি নিতে থাকে আর রোমান্টিক দুস্টুমীতে মগ্ন থাকে ।

সময় আর কথা বার্তার সাথে সাথে পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে থাকে ।

পতি
তুমহে আপনা বানানা কা কসম…

পত্নী
কিসের কসম ? ( বানানার কসম ? )

পতি
ব্যাঙ্গ করা হচ্ছে, হ্যাঁ ?

পত্নী
ছি ছি… আমার এতো স্পর্ধা !
কি যে বলো !

পতি
আমি র কি বলবো ?
দেখতেই পাচ্ছি

পত্নী
কোথায় দেখতে পাচ্ছো ?
দেখতে পেলে ওই তো দাঁড়কাকের মতো চুল
আঁচড়ানোর জন্যে এতো লম্ফ ঝাম্প করতে না !

পতি
প্রথমে ব্যঙ্গ,
তার পর ভোল্যুমাইজড শ্যাম্পু-র এত অহংকার !

পত্নী
মিথ্যা দোষারোপ !
নিজের হাইট এর অহংকার একটু ছেড়ে
এবার নিচু হয়ে আমার শাড়ী-র কুচি-টা ধরো তো দেখি
কেমন পারো

পতি
যদি না পারি ?

পত্নী
না পারলে তোমার-ই পার্টি-তে পৌঁছতে লেট হবে

পতি (তাকে শাড়ির ভাঁজে সাহায্য করতে করতে)
কোন কাজটা একা করতে পারো ?
নিজের ড্রেস টা পর্যন্ত একা পড়তে পারো না ।
কিসের যে অহংকার তোমাদের !

পত্নী
এর মধ্যে “তোমাদের” কোথা থেকে এলো ?

পতি
তাই তো ।
শাড়ী পড়তে গেলে কুচি ধরা,
রান্না করতে গেলে নুন টেষ্ট করো,
সাজতে বসলে কেমন লাগছে বলো,
টিভি দেখতে বসলে জুটি-টা-কে কি মানিয়েছে বলো ?
ফেসবুকে তে আপলোড করতে গেলে কোনটা বেশি লাইক পাবো বলো ?

আরে, কেন বলবো ?
আমার কোন কাজটায় তোমায় বলতে বলি ?
ওদিকে ফোঁশ করার বেলায় নাম্বার ওয়ান ।

পত্নী
আশ্চর্য্য, এক কুচি ধরতে বলায় এত কথা !
ধরতে হবে না কুচি ।
যাবো না তোমার ওই মাতালের পার্টিতে ।
বউ তার শাড়ি খুলে ফেলে, আর বাড়ি তে পড়ার একটা পোশাক পড়তে শুরু করে ।

পতি
আরে, আরে, কি হলো, খুলছো কেন ?

পত্নী
তোমার খুশি হবার দরকার নেই,
তোমাকে খুশি করার মতো কারণের জন্য খুলছি না !

পতি
হ্যাঁ, সে তো জানি ।
আমার খুশি কবে সহ্য হলো তোমার ?

পত্নী
কোন খুশির কথা বলছো ?
মুড হোক না হোক শুরু হয়ে যায়…

পতি
দেখো, ফালতু বলবে না ।
কবে তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করেছি ?

পত্নী
ওহ গড !
তোমাদের মাথায় কি আর কিছুই ঢোকে না ?
আমি মদ গেলা শুরুর কথা বলেছিলাম ।
এটা মনে রেখো, আমরা জাও করি তোমাদের সঙ্গে ডিসকাস করে করি,
তোমাদের জন্যে করি । আর তোমরা ?
সিগারেট এর গন্ধে ভূত পালায়,
ওদিকে মেয়ে দেখলেই মুখ হা হয়ে যায় বমি-তে গাড়ি বাড়ি ভাসে,
অথচ ফ্রি-র মদ পেলেই গলা পর্যন্ত ভর্তি নিজের বৌ-এর হাইট পর্যন্ত যেন না,
ওদিকে রিসেপশনিস্ট-এর সব নম্বর মুখস্ত গুগল থেকে কপি পেস্ট করে করে চাকরি বাঁচাও,
ওদিকে রান্না-র বই দেখলেই উপদেশ শুরু হয়ে যায়!

ওঃ হয়, রিসেপশনিস্ট-এর নম্বর মানে আমি ফোন নাম্বারস এর কথা বলেছিলাম ।
তোমাদের তো আবার নাম্বারস মানে ৩৬-৩৬-৩৬ ছাড়া র কিছু ঢোকে না মগজে
ছেলে টি ভীষণ রেগে যায়, মুখ থেকে কথা বেরোয় না ।
নিজের মনে বিড়-বিড় করতে করতে বেরিয়ে বেরিয়ে যায়…

পতি
হূমমমম… গ্রমমমম… গ্ৰমমমমম…
তোমার সঙ্গে কথা বলাই বেকার !
মানুষ সাধে সাধে মদ খায় ?

ছেলে টি দরজা খুব জোরে বন্ধ করে বাইরে বেরিয়ে যায়, আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই আবার দরজা খুলে ভিতরে ঢোকে ।

পতি
বাই দি ওয়ে, ওটা ৩৬-২৬-৩৬
৩৬-৩৬-৩৬ সাইজ শুয়োরের হয়,
আর হয় বাড়ির বৌ-এর ।
আবার দরজা বন্ধ করে ছেলেটি বাইরে বেরিয়ে যায় ।

পত্নী
কি বললে, দাড়াও বলছি ।
উত্তর না দিয়ে গেলে, ভালো হবে না বলে দিচ্ছি…
আবার দরজা বন্ধ করে ছেলেটি বাইরে বেরিয়ে যায় ।

পত্নী
কি বললে, দাড়াও বলছি ।
উত্তর না দিয়ে গেলে, ভালো হবে না বলে দিচ্ছি…

পতি বাড়িতে থেকে বউ এর চেঁচানোর আওয়াজ শোনে আর বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকে । ভেতরে আসে না, কিন্তু বাইরে দাঁড়িয়ে বৌ এর রেগে যাওয়া তা উপভোগ করতে থাকে, আর খুশিতে নিজের ডান হাত মুঠো করে হাত ঝাকিয়ে "ইয়েস" করে ।

পত্নী
খবরদার, জামার কলার উঁচু করবে না বলে দিচ্ছি ।
এক মুহূর্তের জন্যে হাসব্যান্ড হাসি বন্ধ করে দরজার দিকে তাকায়, আর দরজা ঠেলে ভিতরে উঁকি মারে ।

পত্নী
আমি তোমাকে হাড়ে হাড়ে চিনি ।

পতি
তুমি কচু চেনো !
আমি “বেশ” করেছিলাম ।

এবার আরো জোরে দরজা বন্ধ করে হাসব্যান্ড বেরিয়ে আসে আর নিজের জুতো পড়তে শুরু করে । সেই সময় তার শালা বাইরের গেট দিয়ে ঘরে ঢোকে ।

শালা
কোথায় চললে, পার্টি?

পতি
হুম রে ।
ভেতরে যা, তোর দিদি আছে ।
তোর বৌ কেমন আছে ?

শালা
কে, জুহি?
কোথায় র বউ বানাতে দিচ্ছে দিদি!

পতি
আরে, আমি সঙ্গে আছি । তুই বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে আয় ।
মন্দির-এ বিয়ে করে আমায় খবর দে সব সামলে নেব ।

শালা
সত্যি? থ্যাংক ইউ জামাই-বাবু ।
দিদি’র তো জুহি-কে একদম পছন্দ নয় !

পতি
ও সব আমি সামলে নেব, তু্ই মন্দিরে উঠিয়ে তো নিয়ে আয়…

শালা
ওকে বস ! তুমি না থাকলে আমাদের যে কি হতো !
কাল সকালেই অপারেশন…

পতি
আচ্ছা, এখন ভেতরে যা ।
তোর দিদি কে আবার এই সব কিছু বলিস না যেন !

শালা
মাথা খারাপ !

পতি শালার দিকে তাকিয়ে মেকি হাসি দেখিয়ে বেরিয়ে যায় গেট দিয়ে. শালা ধীরে ধীরে বেডরুম এ ঢুকতে থাকে. হাসব্যান্ড বেরিয়ে যাবার সময় মনে মনে প্রতিশোধের খুশি তে বলে ওঠে...

পতি (VO)
দেখ কেমন লাগে…

3 comments on “FAMILY EPISODE 1

  1. “ওই তো দাঁড়কাকের মত চুল”- কে কাকে কেন বলেছিল?

Leave a Reply

Your email address will not be published.

error: Content is protected !!